পাকিস্তানে সেই ট্রেন থেকে ১০০ জিম্মি উদ্ধার, নিহত ১৬ বিদ্রোহী

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ছিনতাই হওয়া সেই ট্রেন থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে অন্তত ১০০ জিম্মিকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিদ্রোহীদের সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ১৬ সশস্ত্র বিদ্রোহী। এ ঘটনায় ট্রেনের চালকসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৮ নিরাপত্তা কর্মী রয়েছেন।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে কোয়েটা থেকে পেশাওয়ারের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেলুচিস্তানের দারদার এলাকায় পৌঁছলে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা হামলা চালায়। যেখানে সন্ত্রাসীরা প্রায় ৪০০ যাত্রীকে জিম্মি করে। খবর ডন।

তবে উদ্ধার ১০০-এরও বেশি যাত্রীর মধ্যে নারী ও শিশুরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে পুরো ঘটনার বিস্তারিত এখনো পরিষ্কার নয়, কারণ কিছু যাত্রী সন্ত্রাসীদের দ্বারা মুক্তি পেয়েছে, আবার কিছু যাত্রী উদ্ধার করা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর কৌশলগত অভিযান থেকে।

ট্রেনটিতে হামলার পরপরই সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনী ট্রেনটি ঘিরে ফেলে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান চালায়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার সংঘর্ষে ১৬ বিদ্রোহী নিহত হয়, আর পালিয়ে যায় আরও কয়েকজন।

অভিযান চলাকালে ১০০ জনেরও বেশি জিম্মিকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। তবে, কয়েক যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, বেলুচিস্তানের প্রদেশের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি না দিলে তারা আরও কঠোর হামলা চালাবে। তারা পাকিস্তান সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে এবং হুমকি দিয়েছে যে, তাদের দাবি মানা না হলে ১০ জিম্মিকে হত্যা করা হবে।

এ ঘটনায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা কোনো ছাড় দেব না।

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি নিরাপত্তা বাহিনীর সফল অভিযানের প্রশংসা করেছেন এবং বিদ্রোহীদের নির্মূল করতে আরও কঠোর অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ ঘটনার পর দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে বেলুচিস্তানে সামরিক অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহীদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।

বেলুচিস্তানে স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীদের তৎপরতা দীর্ঘদিন ধরে চলমান। পাকিস্তান সরকার এই হামলাকে তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে এবং আরও কঠোর অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।

এদিকে, উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং দেওয়া হচ্ছে, আর নিখোঁজ যাত্রীদের সন্ধানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top