ফিলিস্তিন থেকে ১০ ভারতীয় উদ্ধার, নেপথ্যে কি রহস্য?

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি গ্রাম থেকে ১০ ভারতীয় নির্মাণ শ্রমিককে উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে পশ্চিম তীরের আল-জায়েম গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (৭ মার্চ) টাইমস অব ইসরায়েলের বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে ইসরায়েলের জনসংখ্যা ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই ১০ ভারতীয় শ্রমিককে প্রায় এক মাস ধরে আটকে রাখা হয়েছিল এবং তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাদের ইসরায়েলে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল এবং ওই শ্রমিকদের কোনোভাবে ইসরায়েলে প্রবেশ করানোর জন্য ফিলিস্তিনিরা তাদের পশ্চিম তীরে নিয়ে এসেছিল।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ফিলিস্তিনিরা ওই ১০ ভারতীয় শ্রমিককে পশ্চিম তীরে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আনে এবং পরে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে তাদের ইসরায়েলে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে। তবে এই চেষ্টার মাধ্যমে তারা কি অর্জন করতে চেয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।

টাইমস অফ ইসরায়েল জানিয়েছে, ওই শ্রমিকরা মূলত ইসরায়েলে কাজ করার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন, কিন্তু ফিলিস্তিনিরা তাদের বেশি টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পশ্চিম তীরে নিয়ে আসে। এর পরই তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।

আরেক ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম, ওয়াইনেটনিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলে সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় ফিলিস্তিনিরা ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে সহজেই ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টা করে। সীমান্তে সন্দেহভাজন কিছু লোককে আটক করার পর, ইসরায়েলি সেনারা এই শ্রমিকদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নির্মাণ শ্রমিককে ইসরায়েলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ইসরায়েলে নির্মাণ শ্রমিকের ব্যাপক ঘাটতি সৃষ্টি হয়, যা ভারতীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে পূর্ণ করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়া টুডে প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রায় ১৬ হাজার ভারতীয় নির্মাণ শ্রমিক ইসরায়েলে কাজ করার জন্য গিয়েছেন। এর ফলে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর থেকে এই উদ্ধারকৃত ১০ শ্রমিকের ঘটনা ইসরায়েলি সরকারের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং অভিবাসন নীতির বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করছে।

এখন দেখার বিষয় হলো, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের কি পরিণতি হবে এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা প্রতিরোধ করতে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top