ভারতের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

ভারতের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামাী এপ্রিল থেকে এপ্রিল থেকে এ শুল্ক কার্যকর করা হতে পারে।

মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া এ ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি পণ্যের ওপর পারস্পরিক শুল্ক প্রয়োগের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ভারতের কথা উল্লেখ করেছেন। চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি ভারতের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বাণিজ্যসংক্রান্ত তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত চিহ্নিত করেছেন।

ট্রাম্প দাবি করেছেন যে ভারত এবং অন্যান্য দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন পণ্য, বিশেষ করে অটোমোবাইলগুলোতে অত্যধিক শুল্ক আরোপ করে আসছে, যা মার্কিন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি করছে।

হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের অধিবেশনে ট্রাম্প অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশগুলো দশক ধরে আমাদের বিরুদ্ধে শুল্ক ব্যবহার করেছে। এখন আমাদের পালা সেই দেশগুলোর বিরুদ্ধে শুল্ক ব্যবহার করার। তিনি বিশেষভাবে ভারতের উচ্চ শুল্কের হার উল্লেখ করে বলেন, ভারত আমাদের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ন্যায্য নয়, কখনই ছিল না।

ভাষণে ট্রাম্প বলেন, পারস্পরিক শুল্ক আরোপ শুরু হবে ২ এপ্রিল থেকে, যার লক্ষ্য মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য সমতাভিত্তিক বাণিজ্য পরিবেশ তৈরি করা। এই নতুন নীতির অধীনেযুক্তরাষ্ট্র এমন দেশগুলোর ওপর সমতুল্য শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে যারা মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে।

তিনি বলেন, তারা আমাদের ওপর যে শুল্ক আরোপ করে, আমরা তাদের ওপর সেই শুল্ক আরোপ করব। তারা আমাদের উপর যে কর আরোপ করে, আমরা তাদের ওপর সেই কর আরোপ করব। যদি তারা তাদের বাজার থেকে আমাদের দূরে রাখতে অ-আর্থিক বাধা ব্যবহার করে, আমরাও একই কাজ করব।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপগুলো ভারতের ওপর অসমভাবে প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ মার্কিন আমদানির বেশ কয়েকটি বিভাগে ভারতের শুল্ক গড়ের চেয়ে বেশি। ট্রাম্পের ভাষণে যে বৈষম্যগুলো তুলে ধরা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো আমেরিকান অটোমোবাইল আমদানিতে ভারতের ১০০ শতাংশ শুল্ক, যা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের বিষয়।

গোল্ডম্যান স্যাক্স একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে পারস্পরিক শুল্ক বাস্তবায়ন ৩টি ভিন্ন স্তরে ভারতকে প্রভাবিত করতে পারে: দেশের স্তরে, পণ্যের স্তরে বা অ-শুল্ক বাধার মাধ্যমে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের স্তরে পারস্পরিকতা — যেখানে শুল্ক ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা হয় — মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হবে, যদিও সঠিক অর্থনৈতিক প্রভাব নির্ভর করে চালু করা পদক্ষেপগুলোর সুযোগ এবং স্কোপের উপর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top