যুক্তরাষ্ট্র কি ইউক্রেনে সেনা পাঠাবে?

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের তিন বছরের মাথায় সংঘাত বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর সেই তৎপরতা বেড়েছে। ট্রাম্প বহুবার বলেছেন, তিনি যুদ্ধ বন্ধ চান। কিন্তু কীভাবে সে যুদ্ধ বন্ধ করবেন তা স্পষ্ট করেননি। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করে পুতিনকে থামানোর তাগিদ দিচ্ছেন। গুঞ্জন উঠেছে, জেলেনস্কির দাবি মেনে মার্কিন সেনা ইউক্রেনে মোতায়েন হবে কি না?

এ গুঞ্জনের স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে সেনা পাঠাচ্ছে না। হেগসেথ জার্মানির স্টুটগার্টে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সেখানে তিনি মার্কিন ইউরোপীয় কমান্ড এবং মার্কিন আফ্রিকা কমান্ড সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন সামরিক নেতাদের পাশাপাশি জার্মানিতে নিযুক্ত পরিসেবা সদস্যদের সাথে দেখা করেন। তার পরবর্তী গন্তব্য ব্রাসেলস। সেখানে তিনি ন্যাটো প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের একটি বৈঠকে এবং ইউক্রেন প্রতিরক্ষা যোগাযোগ গ্রুপের সভায় যোগ দেবেন।

হেগসেথ বলেন, আশা করা যায়- ইউক্রেনে দ্রুত শান্তি চুক্তি হবে, যা প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা তখন বল প্রয়োগের ভঙ্গি পর্যালোচনা করতে পারি এবং আগামীকাল আপনারা যা দেখতে যাচ্ছেন তা উৎসাহিত করতে পারি… ইউক্রেন এবং ন্যাটো মন্ত্রী পর্যায়ে আমরা আমাদের বন্ধুদের সাথে সরাসরি আলোচনা করতে যাচ্ছি।

এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চাইলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সব শর্ত মেনে নিতে হবে বলে জানিয়েছে মস্কো। শান্তি আলোচনায় বসার জন্য এ শর্তগুলো পূরণ করা ‘অপরিহার্য’ বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়া।

মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত বছর প্রেসিডেন্ট পুতিন যে দাবিগুলো উত্থাপন করেছিলেন, সেগুলোই এখনো আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে বহাল রয়েছে।

গত বছরের ১৪ জুন দেওয়া এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট পুতিন দুটি প্রধান শর্ত দিয়েছিলেন- এক, ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার আশা ত্যাগ করতে হবে এবং ভবিষ্যতে ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। দুই, যুদ্ধে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে।

অপরদিকে কিয়েভ এ শর্তগুলোকে ‘পূর্ণ আত্মসমর্পণের শামিল’ বলে উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউক্রেন বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তারা ন্যাটোতে যোগদানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং রাশিয়ার দখলে যাওয়া ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top