সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুর রউফ এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনটির আমির ডা. শফিকুর রহমান শোকপ্রকাশ করেন।
শোকবাণীতে তিনি বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সুপ্রিম কোর্ট-এর আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুর রউফ রাজধানী ঢাকার মগবাজারস্থ ইনসাফ বারাকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ হৃদযন্ত্রের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তিনি বলেন, বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুর রউফ ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় শিশু সংগঠন ফুলকুড়ির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আইন এবং আদালত অঙ্গনে তার দীর্ঘ আইনগত পেশা জীবনে পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা এবং দায়িত্ববোধের যে উদাহরণ স্থাপন করেছেন তা একেবারেই বিরল। আমার জানা মতে সত্যিকারের মজলুমদের পাশে দাঁড়াতে তিনি কখনো কারো সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির পরওয়া করেননি। অনেক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়ে আইনি সহযোগিতা প্রদান করেছেন। মজলুমের পক্ষে তার এ লড়াই ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মজলুমদের পক্ষ থেকে আমি তাকে গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি।
তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাকালে ১৯৯১ সালে জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিয়েছিলেন; যে নির্বাচন দেশ-বিদেশে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। তার নিরপেক্ষতা, সততা ও যোগ্যতা ছিল প্রশ্নাতীত।
দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিজমের পর বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্নে তার মতো একজন প্রতিভাবান অভিভাবক এর বড় প্রয়োজন ছিল। তার মৃত্যুতে জাতি একজন অত্যন্ত আদর্শবান, দেশপ্রেমিক, উদার গণতন্ত্রমনা, আইন বিশেষজ্ঞ, ন্যায় বিচারক ও একজন ইসলামী ব্যক্তিত্বকে হারালো।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার সকল ভুলত্রুটি মাফ করে দিন, তার নেক আমলসমূহ কবুল করুন এবং তাকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন। আমি তার শোকাহত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং দোয়া করছি আল্লাহ তাদের এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন।