প্রস্তাব বাস্তবায়নে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চলতি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে সফর করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এটি হবে তার প্রথম সফর, যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ’গাজা উপত্যকা দখল করে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করার’ প্রস্তাবের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্স মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে এ খবর জানায়।

প্রতিবেদন বলা হয়, রুবিও ১৩-১৮ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং পরে তিনি ইসরায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও সৌদি আরব সফর করবেন।

রুবিওর সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি এবং ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালের হামলার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা। তিনি এই সফরে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের প্রচলিত ব্যবস্থা বদলানোর দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে।

এদিকে ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। ২৫ জানুয়ারি থেকে ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, গাজার ফিলিস্তিনিদের উচিত মিসর ও জর্ডানের মতো আঞ্চলিক আরব দেশগুলোতে চলে যাওয়া। তবে, এই প্রস্তাবটি আরব দেশগুলো এবং ফিলিস্তিনিরা প্রত্যাখ্যান করেছে। এই মন্তব্য ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দীর্ঘদিনের আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি করেছে যে, তারা তাদের ভূমি থেকে স্থায়ীভাবে বিতাড়িত হতে পারে।

তবে রুবিও বুধবার বলেছেন যে, গাজার পুনর্গঠনের জন্য ফিলিস্তিনিদের ‘অস্থায়ীভাবে’ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি এই পদক্ষেপকে একটি সাময়িক সমাধান হিসেবে দেখছেন, যাতে গাজা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া সহজ হয়।

এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গত ১৬ মাসে ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। হামলার কারণে গাজার প্রায় পুরো জনসংখ্যা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং সেখানে খাদ্য সংকটের পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া, গাজার পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ও মানবিক সংকটের কারণে।

এভাবে, মার্কো রুবিওর এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক এবং মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি নতুন অধ্যায় তৈরি করতে পারে। যা শুধুমাত্র রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের জন্য নয়, বরং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top