ট্রাম্পকে সতর্ক করল রাশিয়া | কালবেলা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ট্রাম্পের এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে একই দিনে গাজা উপত্যকা নিয়ে এক বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, গাজায় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল এই উপত্যকাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করবে। সেই সঙ্গে গাজার বাসিন্দাদের অন্য কোথাও পুনর্বাসিত করা হবে। তিনি আরও দাবি করেন, এ কাজের জন্য গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য মোতায়েনের প্রয়োজন নেই।

তারও আগে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে মিসর এবং জর্ডানে পুনর্বাসিত করতে চান তিনি। একইসঙ্গে গাজাকে ‘পরিষ্কার’ করে সেখানে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথাও বলেন তিনি।

রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া

ট্রাম্পের এমন পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছে রাশিয়া। ৬ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, বর্তমানে গাজায় সংকটে থাকা লোকজনের জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদান করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই প্রধান কাজ।

গাজা উপত্যকার মালিকানা নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য প্রসঙ্গে জাখারোভা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কোনো লোকরঞ্জনবাদী, অবজ্ঞাপূর্ণ বা বেদনাদায়ক বক্তব্য সমস্যার সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখবে না। বরং এটি এই অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে, যা ইতোমধ্যেই উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ট্রাম্পের এ পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস, ইসলামিক জিহাদসহ বিশ্বের প্রভাবশালী বেশ কয়েকটি দেশ। তারা বলছে, গাজার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে তা ‘জাতিগত নিধনের’ শামিল হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প আরও বলেন, যুদ্ধ শেষে ইসরায়েল গাজা উপত্যকাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তুলে দেবে। গাজাবাসীকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, অনেকেই ইতোমধ্যে উন্নত স্থানে চলে গেছেন এবং তারা সেখানে ভালো আছেন। যারা নতুন করে যাবেন, তারাও খুশি, নিরাপদ ও মুক্ত থাকতে পারবেন।

গাজাকে বিশ্বের অন্যতম সুন্দর শহরে পরিণত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সেরা উন্নয়ন দলের সঙ্গে কাজ করছে এবং ধীর ও সতর্কতার সঙ্গে গাজাকে পুনর্গঠন শুরু করবে। এটি বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন শহরে পরিণত হবে।

ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে অমানবিক ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এ ধরনের মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলবে এবং নতুন করে সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top