এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশি মুরাদ |

বাংলাদেশের সুস্থতা ও মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মী মুরাদ আনসারী ২০২৫ কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডস ফর এক্সেলেন্স ইন ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কের এশিয়া অঞ্চলের শীর্ষ বিজয়ী নির্বাচিত হয়েছেন। বুধবার (১২ মার্চ) লন্ডনের কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের সদর দপ্তর মার্লবরো হাউসে তাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।

মুরাদ আনসারী মানসিক স্বাস্থ্য ও আবেগগত সুস্থতার সম্পূর্ণ সমাধান প্রদানকারী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘সাইকিওর’ এর প্রতিষ্ঠাতা। প্ল্যাটফর্মটি সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছে।

সংস্থাটি ইতোমধ্যে তিন হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে সরাসরি কাউন্সেলিং সেবা দিয়েছে এবং ১২ হাজারেরও বেশি তরুণকে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, যাতে তারা মানসিক চ্যালেঞ্জগুলো দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারেন। তার প্রকল্পটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ৩ সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা-এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

আনসারী ভারতের কেয়ান শাহ, স্মৃতি ভাবা ও মালয়েশিয়ার পুত্রি হুমাইরাহ বিনতি মোনাসোফিয়ান পুত্রা এ তিন প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে এশিয়ার সেরা নির্বাচিত হয়েছেন।

এ বছর কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডসের জন্য ৮০০ এর বেশি আবেদন জমা পড়ে, যা ৫৪ জন প্যান-কমনওয়েলথ বিচারকের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হয়। প্রাথমিকভাবে ৩১ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করা হয় যার মধ্য থেকে ২০ জন ফাইনালিস্ট নির্বাচিত হন। কমনওয়েলথের প্রতিটি অঞ্চল থেকে প্রতিনিধি এ ফাইনালে অংশ নেয়।

মুরাদ আনসারী ছাড়াও আরও ১৯ জন চূড়ান্ত প্রতিযোগী নির্বাচিত হয়েছেন যারা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ও তাদের নিজ নিজ দেশে ও বিশ্বব্যাপী উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। এ প্রতিযোগীদের মধ্যে রয়েছেন সামাজিক উদ্যোক্তা, জলবায়ু কর্মী, উদ্ভাবক ও কমিউনিটি স্বাস্থ্য চ্যাম্পিয়নরা।

কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল, দ্য আর টি অন প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কেসি বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমাদের ৫৬টি দেশে আমরা তরুণ নেতাদের দেখতে পাই, যারা দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করছে, শিক্ষার পক্ষে কথা বলছে ও সংকটে থাকা সম্প্রদায়ের জন্য আশা নিয়ে আসছে। তারা শুধু ভবিষ্যতের নেতা নয়, তারা এখনই নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের কার্যক্রমের বাস্তব প্রভাব আমাদের আশার আলো দেখায় ও ভবিষ্যতে আরও বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি করে।

তিনি আরও বলেন, আজ আমরা যখন আমাদের আঞ্চলিক পুরস্কার বিজয়ীদের, শান্তি পুরস্কার চ্যাম্পিয়নদের ও কমনওয়েলথ ইয়াং পার্সন অব দ্য ইয়ারকে সম্মান জানাই তখন এটি একটি বার্তা বহন করে। সারা বিশ্ব তোমাদের দেখছে, তোমরা মূল্যবান।

কমনওয়েলথ ইয়ুথ প্রোগ্রাম দ্বারা পরিচালিত এ পুরস্কারটি কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে টেকসই উন্নয়নমূলক কাজ করা ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণদের স্বীকৃতি দিতে কাজ করছে। গত পাঁচ দশক ধরে সিওয়াইপি উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে, তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে ও নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে যুব উন্নয়নে বিনিয়োগ করে আসছে। কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডস ফর এক্সেলেন্স ইন ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক এ প্রচেষ্টার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

গত এক দশকে কমনওয়েলথ ইয়াং পার্সন অব দ্য ইয়ার ও অন্যান্য বিজয়ীদের সাফল্যের গল্প প্রমাণ করে যে এ পুরস্কার তরুণদের জীবনে কতটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে কমনওয়েলথের তরুণরা নেতৃত্ব দিচ্ছে, উদ্ভাবন করছে ও অনুপ্রেরণা জাগাচ্ছে যা সবার জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।

সম্মাননা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, যুব নেতৃবৃন্দ, অংশীজন ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top