ট্রাম্পের নেতৃত্বে ২০২৬ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি

বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ফুটবল আসর ২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। উত্তেজনা আর অনিশ্চয়তার আবহে আয়োজিত হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা তদারক করবেন স্বয়ং ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আয়োজিত হতে যাওয়া এই বিশ্বকাপের দামামা বাজছে যখন ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন । এ কারণে এই উদ্যোগ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। একাধিকবার শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে আবার সরে আসা ট্রাম্পের নীতি উত্তর আমেরিকার বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

‘আমি মনে করি, এই পরিবেশ বিশ্বকাপকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করবে,’ ট্রাম্প বলেন, যেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকোর সম্পর্কের টানাপোড়েনকে একধরনের ইতিবাচক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিসেবেই দেখছেন।

২০২৬ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ৪৮ দল অংশ নেবে এবং ১০৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৭৮টি ম্যাচই হবে যুক্তরাষ্ট্রে, যেখানে মেক্সিকো ও কানাডা পাবে মাত্র ১৩টি করে ম্যাচের স্বাগতিকত্ব। প্রতিদিন ছয়টি পর্যন্ত ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।

ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে, ১৯ জুলাই। বিশ্বকাপের বিশাল পরিসরের কথা উল্লেখ করে ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, ‘এটি এমন এক আয়োজন, যেখানে প্রতিদিন তিনটি সুপার বোল অনুষ্ঠিত হবে।’

বিশ্বকাপ আয়োজনের বিশাল কর্মযজ্ঞে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা করে ইনফান্তিনো বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো বিশ্বব্যাপী আসা দর্শকদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও চমকপ্রদ আয়োজন নিশ্চিত করা।’ তিনি ট্রাম্পকে একটি ব্যক্তিগত ম্যাচ বল উপহার দেন এবং ২০২৫ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ট্রফি উন্মোচন করেন।

ট্রাম্প পরে হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত ক্রিপ্টোকারেন্সি সামিটে এই ট্রফি প্রদর্শন করেন, যা তার বিশ্বকাপ-সংশ্লিষ্ট উচ্ছ্বাসেরই প্রতিফলন।

যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল ক্রমশ জনপ্রিয় হলেও এখনো এটি প্রধান ক্রীড়ার মর্যাদা পায়নি। তবে ইনফান্তিনো মনে করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল এখনো অপ্রকাশিত সম্ভাবনার বিশাল ক্ষেত্র, এবং এই বিশ্বকাপ তা বদলে দিতে পারে।’

বিশ্বকাপের পর ২০২৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক আয়োজনের দায়িত্বও নিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি হবে ২০০২ সালের শীতকালীন অলিম্পিকের পর যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত প্রথম গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। ফলে বিশ্বকাপের টাস্কফোর্স কার্যকরভাবে কাজ করতে পারলে সেটি অলিম্পিক আয়োজনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মাঝে উত্তেজনা তৈরির ট্রাম্পের কৌশল কতটা সফল হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে তার বক্তব্য অনুযায়ী, ‘উত্তেজনা ভালো জিনিস,’ এবং ২০২৬ বিশ্বকাপ যেন সেই উত্তেজনাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রস্তুত!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top