আমার শরীরে ভারতীয় ডিএনএ রয়েছে : ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবোয়ো সুবিয়ান্তো বলেছেন, তার শরীরে ভারতীয় ডিএনএ রয়েছে। ভারতীয় সংগীত শুনলেই তিনি নাচতে শুরু করেন। এই মন্তব্য তিনি করেন ভারতীয় প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর আয়োজিত এক ভোজসভায়।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবোয়ো সুবিয়ান্তো। এর একদিন আগে, শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে তার সম্মানে ভোজসভা আয়োজন করেন ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু।

ভারতীয় সংগীতের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ

ভোজসভায় উপস্থিত অতিথিদের সামনে প্রেসিডেন্ট সুবিয়ান্তো বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ আগে আমার জেনেটিক সিকোয়েন্সিং টেস্ট এবং ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছিল। তারা আমাকে জানিয়েছে, আমার শরীরে ভারতীয় ডিএনএ রয়েছে। এটা সবাই জানে— যখন আমি ভারতীয় গান শুনি, তখনই নাচতে শুরু করি।’

তার এই কথার পর উপস্থিত অতিথিরা হাসিতে ফেটে পড়েন। তার ডান পাশে ছিলেন ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখড় এবং বাঁ পাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ ছাড়া ভোজসভায় ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সামরিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

ভারত-ইন্দোনেশিয়া সম্পর্কের ঐতিহাসিক যোগসূত্র

ভোজসভায় সুবিয়ান্তো ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সংযোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে প্রাচীন ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক যোগসূত্র রয়েছে। আমাদের ভাষার অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশের উৎস সংস্কৃত। ইন্দোনেশিয়ার অনেক নামই আসলে সংস্কৃত থেকে এসেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার প্রভাব অত্যন্ত প্রবল, যা আমাদের জেনেটিক্সের অংশ।

সমুদ্রপথ সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা

ভারত ও ইন্দোনেশিয়া শুধু সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক বিষয়ে নয়, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রেসিডেন্ট প্রবোয়ো সুবিয়ান্তো সমুদ্রপথে নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং মালাক্কা ও সিঙ্গাপুর প্রণালি দিয়ে নিরাপদে যাতায়াত নিশ্চিত করার বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেন।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগ উভয় দেশের আর্থিক বৃদ্ধির পথ আরও প্রসারিত করবে।

সাংস্কৃতিক বন্ধনের এক নতুন উদযাপন

ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এই বিশেষ আয়োজন ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ককে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। প্রেসিডেন্ট সুবিয়ান্তোর মন্তব্য শুধু দুই দেশের বন্ধুত্বের উষ্ণতা বাড়ায়নি, বরং প্রমাণ করেছে— সংস্কৃতি, সংগীত এবং ঐতিহ্যের মাধ্যমে বিশ্ব আরও ঘনিষ্ঠ হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top