নারী-পুরুষ ছাড়া অন্য লিঙ্গের ঠাঁই হবে না যুক্তরাষ্ট্রে : ট্রাম্প

মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম যৌথ অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্যে একটি বিতর্কিত ঘোষণা দিয়েছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেবল নারী এবং পুরুষ ছাড়া আর কোনো লিঙ্গের মানুষের জায়গা হবে না।

ক্ষমতা গ্রহণের পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে প্রথমবারের মতো কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প এ কথা বলেন। এ বক্তব্যে লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে ট্রাম্পের দৃঢ় অবস্থান ফুটে ওঠে। খবর বিবিসি।

ট্রাম্প বলেন, আমরা একটি নতুন সরকারি নীতি গ্রহণ করেছি। আমাদের দেশে কেবলমাত্র দুটি লিঙ্গের মানুষ থাকবে, নারী এবং পুরুষ।

তিনি আরও বলেন, স্কুলগুলোতে জাতিতত্ত্বের বিষ মুছে ফেলা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, শিক্ষাব্যবস্থায় আর কোনো ‘জেন্ডার স্টাডিজ’ বা লিঙ্গ পরিচয়ের বিষয় পড়ানো হবে না।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি আমেরিকায় ‘প্রগতিবাদী’ লিঙ্গ পরিচয়ের ধারণা ও শিক্ষা পদ্ধতির বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ট্রাম্পের দাবি, স্কুলগুলোর পাঠ্যক্রম থেকে লিঙ্গ পরিচয়বিষয়ক শিক্ষার পরিবর্তন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এরকম কোনো শিক্ষার প্রচলন করা হবে না।

ট্রাম্প তার ভাষণে আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি, যেই পেশাতেই আপনি থাকুন—ডাক্তার, আইনজীবী, অ্যাকাউন্ট্যান্ট অথবা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার—আপনাকে শুধু মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। আপনাকে পদোন্নতি বা কাজের সুযোগ পেতে হবে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। লিঙ্গ বা জাতি পরিচয়ের ওপর কোনো ধরনের প্রাধান্য দেওয়া হবে না।

এখানেই শেষ নয়, ট্রাম্প তার ক্ষমতা গ্রহণের পর এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের প্রতি তার আগের অবস্থানও পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নারী ও পুরুষ ছাড়া আর কোনো লিঙ্গের সর্বনাম ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না যুক্তরাষ্ট্রে।

এছাড়া, ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে আর কোনো ট্রান্সজেন্ডার নিয়োগ করা হবে না। এই ঘোষণায় তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীতে যারা ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে কাজ করছেন, তাদের জন্য কোনো লিঙ্গ পরিবর্তন বা সেই সম্পর্কিত সুবিধা আর দেওয়া হবে না।

এমনকি, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করার পর ২৭ জানুয়ারি একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেখানে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় রূপান্তরকামীদের জন্য গ্রহণ করা কিছু নীতির পরিবর্তন করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। বাইডেন প্রশাসন রূপান্তরকামীদের জন্য আলাদা লিঙ্গ পরিচয়ের ব্যবস্থা রেখেছিল, কিন্তু ট্রাম্প এখন সেই নীতি ফিরিয়ে নেবেন।

এভাবে, ট্রাম্প তার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রগতিশীল লিঙ্গ পরিচয়ের বিষয়টিকে সীমাবদ্ধ রাখার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন, যা তাকে সমালোচকদের চোখে আরও একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হিসেবে উপস্থাপন করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top