যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযানে কঠোর অবস্থানে মার্কিন প্রশাসন। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পর হাজারো অভিবাসীকে আটক করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এবার অবৈধ অভিবাসীদের জন্য আরও ভয়ানক শাস্তির ব্যবস্থা করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি আটককৃতদের পাঠানো হতে পারে কিউবার গুয়ানতানামো বেতে অবস্থিত কুখ্যাত বন্দিশিবিরে। এ তালিকায় আছেন বাংলাদেশি নাগরিকও।
সোমবার (৩ মার্চ) রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার কিছুসংখ্যক অবৈধ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত না পাঠিয়ে শাস্তি দিতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। তাদের গুয়ানতানামো বের কারাগারে পাঠানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত।
এ তালিকায় আছেন ভেনেজুয়েলা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নাগরিকেরা। বর্তমানে তারা টেক্সাস, অ্যারিজোনা ও ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছেন। এসব নাগরিক অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। আটকের পর তাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার চূড়ান্ত নির্দেশ জারি হয়। তবে দুর্ভাগ্য হলো- এসব বন্দিদের নিজ দেশে ফেরত না পাঠিয়ে গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠানো হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন (এসিএলইউ) নামের এক মার্কিন মানবাধিকার সংগঠন। গত শনিবার করা ওই আবেদনে গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠানোর শঙ্কায় থাকা ১০ জন অবৈধ অভিবাসীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসির একটি ফেডারেল আদালতে দায়ের করা আবেদনে বলা হয়েছে, গুয়ানতানামো বেতে কঠিন পরিস্থিতি বিদ্যমান। সেখানে অবস্থান করা অভিবাসীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা প্রবল। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আইন লঙ্ঘন করা হবে। দ্রুত এ সিদ্ধান্তের প্রতিকার চান তারা।
এ বিষয়ে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, তারা সবচেয়ে খারাপের মধ্যেও সবচেয়ে খারাপ অভিবাসীকে গুয়ানতানামোতে পাঠাচ্ছেন। তবে তার বিভাগের তথ্য অনুসারে, প্রাথমিকভাবে বেতে পাঠানো ১৭৭ জন ভেনেজুয়েলানের প্রায় এক তৃতীয়াংশের নামে কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, অবৈধ অভিবাসী বিতাড়নের ঘোষণা আগে থেকেই ছিল। এখন এসিএলইউর আদালতে দ্বারস্থ হওয়া ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার পদক্ষেপ নেবে।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেই অবৈধ অভিবাসীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবেন- এই হুংকার আগেই দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । সেই অনুযায়ী ক্ষমতা গ্রহণের পর বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছে তার প্রশাসন। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে আরও কঠোর হন ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় বাবা-মা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে, এমন লাখো অবৈধ অভিবাসী শিশুকে খুঁজে বের করতে অভিবাসন এজেন্টদের নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যাপক বিতাড়ন অভিযানের সম্প্রসারণ বলে মনে করা হচ্ছে।