খাবার বানানোর অনন্য কৌশলেই ভিড় জমাচ্ছে দোকানে

এক নাগাড়ে শোনা যাচ্ছে চামচের টুং টাং শব্দ। একটু এগিয়েই দেখা গেল একের পর এক দোসা বানাচ্ছেন এক ব্যক্তি। সমান্তরাল পাতের ওপর বানানো এই দোসা বানানো হতেই তা ছুড়ে মারছেন। আর তার সহকারী সেই দোসা ধরে ফেলছেন অনায়েসে। পাশেই এক ব্যক্তি অর্ডার নিচ্ছেন। সুস্বাদু এই খাবার খেতে রাস্তার পাশের এ দোকানে ভিড় জমিয়েছেন নানা বয়সের মানুষজন।

মানুষ শুধু মজাদার এই খাবার খেতেই এখানে আসেননি। বরং দোকানদার যে গতিতে খাবার বানায় এবং যে অনন্য স্টাইলে তা পরিবেশন করেন, সেটিও ক্রেতাদের আকর্ষণ করার অন্যতম কারণ। এভাবে দোসা উড়িয়ে মারার স্টাইলের কারণে রাতারাতি উড়ন্ত দোসার দোকানি হিসেবেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তিনি।

ব্যস্ত রাস্তার পাশে গাড়ি বসিয়ে দোসা বিক্রি করছেন মুথু। জ্বলন্ত চুলা থেকে ধোঁয়া উঠছে। কিন্তু থেমে নেই মুথুর দুই হাত। দ্রুত গতিতে দোসা বানিয়েই চলেছেন ভারতের মুম্বাইয়ের এই দোসা বিক্রেতা। মচমচে হয়ে গেলে দোসার ওপর দিয়ে দিচ্ছেন সবজি। এরপর দোসাকে কয়েকটি ভাঁজ করে তা কেটে প্লেটসহ মারছেন উড়িয়ে। নিখুঁত নিশানায় ছোড়া সেই দোসার প্লেট ধরে ফেলছেন মুথুর সহকারী।

মুথুর এত দ্রুত হাত চালান যে পাঁচ মিনিটে প্রায় ২৫টি দোসা বানাতে পারেন। এমন কলাকৌশল দেখতে প্রতিদিনই মুথু দোসা কর্নারে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। মুথু নিজেও সেটা জানেন। তার ভাষায়, আমার হাতের দোসা খেতে অনেকেই আসেন। তারা আমার দোসা বানানো দেখেন। আমি শহরের বাইরে চলে গেলে এমন ভিড় পাব না।

রাস্তার ওপর করা এই কসরত মুথুকে রাতারাতি সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিতি এনে দিয়েছে। করোনার সময় তার ভিডিও বানিয়ে অনেকেই লাখ লাখ ভিউও পেয়েছেন। এমনকি মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রাও মুথুকে নিয়ে করা ভিডিও শেয়ার করেন। মুথুকে নিয়ে আনন্দ মাহিন্দ্রা লিখেন যেন সে রোবটের মতো কাজ করছেন। এরপর থেকে মুথুর জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায়।

অনন্য স্টাইলের জন্য ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা রজনীকান্ত বেশ সুপরিচিত। তার কাছ থেকেই দ্রুত হাত চালানোর এমন অনুপ্রেরণা পেয়েছেন মুথু। এতে তিনি ক্রেতাদের যেমন আকৃষ্ট করতে পেরেছেন, পাশাপাশি বেড়েছে তার বিক্রিও। সবাই দ্রুত খাবার পেতে চায়, তাই নিজের ব্যবসার জন্য একটি আইডিয়াকেই কাজে লাগাচ্ছেন মুথু।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top