ইউক্রেনকে সহায়তা করবে ট্রাম্প, চায় দুর্লভ খনিজের অর্ধেক মালিকানা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের দুর্লভ খনিজ সম্পদের ৫০ শতাংশ মালিকানা দাবি করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবটি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কাছে পেশ করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যম এনবিসি’র এক প্রতিবেদনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।

এটি একটি নতুন চুক্তি যেখানে বলা হচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা মোতায়েন করতে পারে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অর্থ পরিশোধের পরিবর্তে এই মালিকানা চুক্তিটিকে যুদ্ধকালীন সহায়তার বিনিময়ে ইউক্রেনের প্রতিদান হিসেবে দেখছে।

অর্থাৎ, ট্রাম্প প্রশাসন কিয়েভের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজসহ প্রাকৃতিক সম্পদ পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি, ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি আমদানি করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এর বিপরীতে, ওয়াশিংটন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করবে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট গত সপ্তাহে কিয়েভে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে এক বৈঠকে এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। বৈঠকের পরে বেসেন্ট বলেন, এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে, তবে তিনি চুক্তির বিস্তারিত কিছু বলেননি।

জেলেনস্কি এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেননি। তিনি জানিয়েছেন, এটি পর্যালোচনা করার জন্য তার সময় প্রয়োজন। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেছিলেন, তার আইনজীবীরা এই প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করবেন এবং কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। তিনি এই প্রস্তাবটিকে একটি স্মারকলিপি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, নিরাপত্তা চুক্তি হিসেবে নয়।

এর আগে ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি ইউক্রেনের ৫০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের দুর্লভ খনিজ সম্পদের ৫০ শতাংশ মালিকানা চান এবং ইউক্রেন এতে রাজি হতে পারে বলে তিনি আশা করছেন।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ যেমন টাইটানিয়াম, লিথিয়াম ও অন্যান্য রেয়ার আর্থ মিনারেলসের মালিকানা পেতে চায়। এই খনিজগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রযুক্তি, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়।

এই প্রস্তাবের মাধ্যমে, ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের খনিজ সরবরাহ ব্যবস্থায় চীন ও রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে। ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ এখন বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র এই সম্পদগুলি পাওয়ার মাধ্যমে তার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করতে চায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top