জটিলতা কাটলেও ক্ষত শুকাবে তো!

নারী ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনার পর কোচ বয়কট সংক্রান্ত জটিলতার ইস্যুতে ইতিবাচক খবর দিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নারী বিভাগের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরন, ‘মেয়েরা ফিরবে, ট্রেনিংয়ে ফিরবে; কিন্তু এখন ফিরবে না।’কিন্তু যাকে নিয়ে সমস্যা, সে পিটার বাটলারের কণ্ঠে কিন্তু এখনও চড়া সূর!

সর্বশেষ যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তা হচ্ছে—আসন্ন আরব আমিরাত সফরে যাচ্ছে বিকল্প দল। কোচ বয়কটের সিদ্ধান্তে অনশনে থাকা সিনিয়র ১৮ ফুটবলারকে এ সফরের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে না। ২৪ ফেব্রুয়ারি দল আরব আমিরাত যাওয়ার পর বাকি খেলোয়াড়দের ক্যাম্প থেকে ছুটি দেওয়া হবে। ছুটিতে যাবেন সিনিয়র ১৮ ফুটবলারও। আরব আমিরাত সফরের পর পুনরায় জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু হবে। ওই সময় জাতীয় দলে জুনিয়রদের সঙ্গে যোগ দেবেন সিনিয়ররা। কিন্তু সেখানে বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলারের সকলে থাকবেন কি না—পরিস্কার করা হয়নি।

মাহফুজা আক্তার কিরন অচলাবস্থা দূর হওয়ার সংবাদ দেওয়ার খানিক বাদে কোচ পিটার বাটলারও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সে কথোপকথনের সূরে মনে হচ্ছে, কোচ এখনও সবকিছু স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি। সে স্বাভাবিকতার জন্য অবশ্য মাহফুজা আক্তার কিরন দুয়ার খুলে রেখেছেন। বাফুফে নারী বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, ‘ছুটির পর ক্যাম্পে ফেরার পর মেয়েদের সঙ্গে কোচকে নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসবেন বাফুফে কর্মকর্তারা।’ সে আলোচনায় পারস্পরিক জটিলতা দূর হলেই হয়!

রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পিটার বাটলার যা বললেন, তাতে এ ব্রিটিশ কোচের কণ্ঠে অভিমানের সুর ছিল স্পষ্ট। ৫৮ বছর বয়সি এ কোচ বলছিলেন, ‘আমি একজন কোচ এবং বাবা। আমারও একটি মেয়ে এবং ছেলে আছে। আমি তাদের শ্রদ্ধাশীল এবং নম্র হতে শেখাই। সেভাবেই তাদের লালন-পালন করি। শুধু চাই আমাকে সম্মান করা হোক, কিন্তু তা হয়নি। আমি বোকা নই এবং বুঝতে পারি যে কিছু ব্যক্তিকে রক্ষা করার জন্য একটি খেলা খেলা হচ্ছে। দিনশেষে আমি প্রতিহিংসাপরায়ণ কিংবা মন্দ স্বভাবের মানুষ নই। আমরা জাতীয় দলের জন্য মূল্যবান ও সৃষ্টিশীল খেলোয়াড়দের মূল্যায়ন করব এবং সিদ্ধান্ত নেব।’

বাফুফে নারী বিভাগের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরন ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনা করে অচলাবস্থা অবসানের ঘোষণা দিলেও কোচের সঙ্গেও আলোচনা করা জরুরী। কারণ নির্দিষ্ট কিছু ফুটবলার ক্যাম্পে থাকলে কোচিং না করানোর হুমকি দিয়েছিলেন পিটার বাটলার। আজ এ সম্পর্কে ব্রিটিশ কোচ গণমাধ্যমকে যা বলেছেন, তাতে একটা ইঙ্গিতও পাওয়া গেল, ‘১৮ জনের মধ্যে কিছু খেলোয়াড় আছে, আমি যাদের ফুটবল দক্ষতার প্রশংসা করি। আশা করি, আমাকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী খেলোয়াড়দের সাথে কাজ করতে বাধ্য করা হবে না। আসুন আগামী কয়েক সপ্তাহের দিকে মনোনিবেশ করি।’

জাতীয় দলের ক্যাম্পে থাকা ৩৬ ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি হলেও এখনও চুক্তির বাইরে আছেন বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলার। তাদের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে মাহফুজা আক্তার কিরন বলেছেন, ‘মেয়েরে ছুটিতে যাবে। ছুটি থেকে ফিরে সকলে ক্যাম্পে যোগ দেবে। তখনই চুক্তিপত্র হবে।’ কিন্তু সে চুক্তিপত্রে বিদ্রোহ করা ১৮ ফুটবলারের কতজন থাকবেন—এটা সময়ই বলতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top