ডিসি সম্মেলন শুরু আজ, রাষ্ট্রপতির অধিবেশন বাদ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে (চেতনা) ধারণ করে ঢাকায় এ বছরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ রোববার। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন চলবে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত। তবে রেওয়াজ থাকলেও এবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ডিসিদের সাক্ষাৎ হচ্ছে না। অর্থাৎ এবারের সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির অধিবেশন বাদ যাচ্ছে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ডিসি সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ।
তিনি বলেন, সময় মেলাতে না পারায় এ বছর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কোনো অধিবেশন থাকছে না।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টায় নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত বছরের মতো এবারও সম্মেলনের মূল ভেন্যু রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন। সম্মেলনে চারটি বিশেষ ও ৩০টি কার্য-অধিবেশন থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে উদ্বোধন অনুষ্ঠান, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি মুক্ত আলোচনা এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের একটি সভা। এই চারটি বাদ দিয়ে বাকি ৩০টি হবে কর্ম-অধিবেশন।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাটি হবে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে নির্দেশনা গ্রহণের যে একটি প্রোগ্রাম আছে, সেটি হবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে। আর প্রধান উপদেষ্টার অফিসের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি এবং তার (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আরেকটি কর্ম-অধিবেশনসহ দুটি হবে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে। অংশগ্রহণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা ৫৬টি। বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ১ হাজার ২৪৫টি প্রস্তাবের ৩৫৪টি প্রস্তাব কার্যপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো নিয়ে সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে আলোচনা হবে।

এবারের সম্মেলনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখা হবে জানিয়ে ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার পর সরকারের দর্শনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়নি। আবার আগের সরকারের দর্শনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্নজনের নামে সড়ক, সেতুর মতো অবকাঠামোগতসহ কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে বিগত সম্মেলনগুলোর তুলনায় এ বছর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হার কম হয়েছে। তবে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হলে গত বছরের সম্মেলনের বাস্তবায়ন অগ্রগতি হার ৪৬ শতাংশ থেকে আরও বাড়বে। এ বছর ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা বাজেট আছে। কিছু কম হবে বলে আশা করি।’

প্রস্তাবের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এমপিওভুক্তি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যা আয় হয়, তা কীভাবে ব্যয় হয় জানা যায় না বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। তার হিসাব রাখার প্রস্তাব করেছেন একজন ডিসি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে বডি ক্যামেরা রাখা, মারণাস্ত্র ও ছররা গুলি না রাখার প্রস্তাব আছে। সার্কিট হাউসে গুরুত্বপূর্ণ অতিথি থাকলে কেপিআই হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব আছে। পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে অনিয়ম দূর করতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে একজনকে রাখার প্রস্তাব আছে।

তিনি আরও বলেন, এবারের প্রধান-প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদারকরণে ব্যবস্থা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচনে কর্মসূচি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং আরও অন্যান্য বিষয়; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবারকল্যাণ পরিষেবার উন্নয়ন, পরিবার সংরক্ষণ ও দূষণ রোধের বিষয়ে আলোচনা, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top