ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির নতুন তথ্য ফাঁস

চীনের সাথে উত্তেনজনা বাড়ছে ফিলিপাইনের। এমন সময় ম্যানিলার সাথে নয়াদিল্লির দ্বিতীয় বড় প্রতিরক্ষা রপ্তানি চুক্তি হতে যাচ্ছে। এর আওতায় ভারত এই বছর ফিলিপাইনের কাছে স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির আশা করছে। ভারতীয় কয়েকটি সূত্র রয়টার্সের কাছে এসব তথ্য ফাঁস করে।

ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা কর্তৃক তৈরি ‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটির প্রতি ফিলিপাইনের আগ্রহ পুরোনো। তারা নয়াদিল্লিকে জানিয়েছে, এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া অর্থবছরের মধ্যেই একটি ক্রয়াদেশ পেতে যাচ্ছে ভারত। তিনটি সূত্র রয়টার্সকে এসব জানিয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে সব সূত্র কথা বলেছেন। তারা এ ব্যাপারে বেশ সতর্ক এবং নাম প্রকাশ হওয়ার ব্যাপারে ভীত।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, ২৫ কিলোমিটার (১৬ মাইল) পর্যন্ত পাল্লার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা গত বছর ২৩০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তিতে আর্মেনিয়ায় রপ্তানি করেছে ভারত। ফিলিপাইনের বিক্রি আর্মেনিয়ান চুক্তির চেয়েও বড় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে, কত পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র এবং রাডারসহ সংশ্লিষ্ট সিস্টেম বিক্রি হতে যাচ্ছে সে সংখ্যা প্রকাশ করেনি সূত্রগুলো।

ভারতের ‘ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড’ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর প্রস্তুতকারক। গত বছর ম্যানিলায় এশিয়ান প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদর্শনীতে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করে।

এসব তথ্য পাওয়ার পর রয়টার্স কোম্পানি এবং ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কেউ মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেননি।

ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষা মুখপাত্র আর্সেনিও আন্দোলং-ও কোনো চুক্তির সুনির্দিষ্ট বিবরণ বা ক্রয়ের পরিকল্পনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে বলেছেন, তার দেশের সশস্ত্র বাহিনী এই ক্ষমতাগুলোর (ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা) প্রয়োজনীয়তা প্রকাশ করেছে।

২০২২ সালে ফিলিপাইনের কাছে ভারতের ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের মধ্য-পাল্লার ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির পর নতুন চুক্তি অনেকটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু বিষয়টি গুরুত্ব ও সংবেদনশীলতা পেয়েছে চীনের কারণে। দক্ষিণ চীন সাগরের ব্যস্ত জলপথে বেইজিংয়ের দ্বিপাক্ষিক দাবির কারণে ফিলিপাইনের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন সময় ম্যানিলা তার সামরিক শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টায় মাতোয়ারা। এরই অংশ হিসেবে অস্ত্রগুলো কেনা হতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। চীনের বিরুদ্ধে কাজে লাগতে পারে এমন অস্ত্র ভারত থেকে ফিলিপাইনে যাচ্ছে; ভারত হয়তো চাচ্ছে তা কেউ না জানুক।

ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক। তবে ২০২০ সালে হিমালয় সীমান্তে চীনের সৈন্যদের সংঘর্ষের পর তার প্রতিবেশী অঞ্চলে চীনের সামরিক শক্তি এবং প্রভাব মোকাবিলায় দেশীয় উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top