পানামা জয়ে নিজের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প

ক্ষমতায় বসার আগেই পানামা খাল দখলের হুঙ্কার দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এজন্য ভিন্ন কৌশল নিয়েছেন তিনি। নিজের প্রশাসনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে পাঠাচ্ছেন পানামায়। লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের খুবই ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ পানামা। কিন্তু ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ানি) এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মাত্র চার দিন আগে দায়িত্ব নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এরই মধ্যে নিজের অগ্রাধিকার ঠিক করে ফেলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট। এক সময়ের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রুবিওকে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর পদে বসিয়েই দিয়েছেন গুরুদায়িত্ব। পানামাকে যেভাবেই হোক যুক্তরাষ্ট্রের বলয়ে আনতে হবে আর চীনের দুষ্টু প্রভাব দূর করতে হবে। আর তাই আগামী সপ্তাহে রুবিওকে পানামা পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প।

কৌশলগত কারণে পানামা খালের গুরুত্ব অনেক। যুক্তরাষ্ট্রই এই খাল খনন করে দিয়েছিল। পরে এক চুক্তির আওতায় সেই খালের দায়িত্ব পানামার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু গেল ডিসেম্বর থেকে এই খাল যুক্তরাষ্ট্রের হাতছাড়া হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করতে থাকেন ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, সমাবেশ এমনকি প্রেসিডেন্সিয়াল শপথ অনুষ্ঠানেও পানামা খালের জিকির করেন তিনি।

ট্রাম্পের অভিযোগ, পানামা খাল এখন চীনের নিয়ন্ত্রণে। এখন যেভাবেই হোক এই খাল নিজেদের দখলে নিতে হবে, যাতে চীনের প্রভাব দূর করা যায়। কিন্তু চীন ও পানামা বলছে, খালের কার্যক্রমে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। বরং নিরপেক্ষ একটি জলপথ হিসেবেই খালটির কার্যক্রম চলমান আছে। কিন্তু ট্রাম্প যে তাতে সন্তুষ্ট নন, রুবিওকে সেখানে পাঠানোর মাধ্যমেই এই বার্তা দিচ্ছেন তিনি।

পানামা ছাড়াও রুবিও গুয়েতেমালা, এল সালভেদর, কোস্টারিকা ও ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র সফর করবেন। বাইডেন প্রশাসনের সময় লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব তৈরি হয়। সেই সুযোগে এই মহাদেশে নিজের বলয় তৈরিতে মনোযোগী হয় চীন। এখন যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে দ্বোরগোড়ায় একটি সামুদ্রিক বন্দরও নির্মাণ করেছে বেইজিং। সেখানে যুদ্ধজাহাজও মোতায়েন করা সম্ভব, যা যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার বড় কারণ।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার না করলে চীন যে আরও বেশি আগ্রাসী হবে, তা বুঝতে পেরেছেন ট্রাম্প। রুবিওর এই সফরের আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সে কথাই বললেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপদ থাকা ও সমৃদ্ধির জন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। চীন পানামা খাল পরিচালনা না করলেও কাছাকাছি থাকা দেশগুলোতে বেইজিংয়ের উপস্থিতি রয়েছে।

পানামা খালঘেঁষে চীনের কমপক্ষে পাঁচটি সরকারি এন্টারপ্রাইজ রয়েছে। ওই কোম্পানিগুলো নিয়ে ২০২৩ সালেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাদার্ন কমান্ডের তৎকালীন কমান্ডার জেনারেল লরা রিচার্ডসন। তার ভাষায়, এসব কোম্পানিকে সামরিক উদ্দেশ্যেও ব্যবহার করা যাবে। গেল মাসে রুবিওর নিয়োগের জন্য যে শুনানি হয়, সেখানে তিনিও একই ধরনের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top