গাজায় ‘নরকের দরজা’ খুলে দেওয়ার হুমকি দিলেন ইসরায়েলি মন্ত্রী

গাজায় চলমান সংঘাতের মধ্যে হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি। তিনি বলেন, হামাসের জন্য নরকের সব দরজা খুলে দেওয়ার সময় এসেছে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

কারহি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন বলেছেন, ঠিক তেমনভাবেই ব্যবস্থা নিতে হবে। মানবিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে, পানি-বিদ্যুৎ-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে এবং জিম্মিরা মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। এবার আমাদের সেনাদের ওপর কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না।

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও চরম উত্তেজনা

গাজা উপত্যকায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চললেও পরিস্থিতি চরম উত্তপ্ত। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে হামাস জিম্মিদের মুক্তি স্থগিত করেছে।

এ সিদ্ধান্তের পরই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেন, যদি হামাস শনিবারের (১৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে সব জিম্মি মুক্তি না দেয়, তবে যুদ্ধবিরতি বাতিল হবে এবং গাজায় নরকের মত ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে।

এর পরপরই ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী নেতারা কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, হামাসকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে- শনিবারের মধ্যে সব জিম্মি মুক্তি না পেলে, গাজায় নরকের সব দরজা খুলে দেওয়া হবে।

এদিকে, উগ্রপন্থি দল ওতজমা ইয়েহুদিতের নেতা ইতামার বেন গাভির, যিনি বন্দি বিনিময় চুক্তির প্রতিবাদে ইসরায়েল সরকারের পদ ছেড়েছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি উপেক্ষা করাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।

গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট

গাজা উপত্যকায় ১৫ মাস ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।

এই উত্তেজনার মধ্যেই আন্তর্জাতিক মহল যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েলের কট্টরপন্থি নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য ও ট্রাম্পের হুমকি নতুন করে সহিংসতার শঙ্কা তৈরি করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top