এবার যুক্তরাজ্যেও অবৈধ ভারতীয়দের ধরতে অভিযান শুরু

এবার অবৈধ ভারতীয়দের ধরতে অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে খুঁজে খুঁজে অভিযান চালানো হচ্ছে। এজন্য ভারতীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিশানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার ( ১১ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের লেবার সরকার ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির অনুকরণে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে ভারতীয় রেস্তোরাঁ, নেল বার, কনভেনিয়েন্স স্টোরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিশানা করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত জানুয়ারিতে ৮২৮টি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। এটি গত বছরের তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেশি। এ সময় ৬০৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৭৩ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে উত্তর ইংল্যান্ডের হামবারসাইডে একটি ভারতীয় রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেপ্তার ও ৪ জনকে আটক করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুপার বলেন, অভিবাসন নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং প্রয়োজনে কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। অনেক দিন ধরে নিয়োগকর্তারা অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ ও শোষণ করে আসছে, কিন্তু কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটি শুধু ঝুঁকিপূর্ণ চ্যানেল পারাপারকে উৎসাহিত করছে না, বরং দুর্বল মানুষের শোষণ, অভিবাসন ব্যবস্থা এবং অর্থনীতির ক্ষতি করছে।

প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকার অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার চাপে রয়েছে। এজন্য তারা ট্রাম্পের মতো সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে দেখাচ্ছে কীভাবে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠাতে বিমানে তোলা হচ্ছে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজারের বেশি অপরাধী ও অবৈধ অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে ভিয়েতনাম ও আলবেনিয়ায় প্রচারণা চালাচ্ছে। এসব প্রচারণায় অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে অনুপ্রবেশকারীদের বাস্তব গল্প তুলে ধরা হচ্ছে। অভিবাসীরা ঋণ, শোষণ এবং প্রতিশ্রুতির চেয়ে ভিন্ন জীবনের মুখোমুখি হচ্ছে।

গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত অবৈধ কর্মসংস্থান ও গ্রেপ্তারের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় এক হাজার ৯০টি সিভিল পেনাল্টি নোটিশ জারি করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাদের প্রতি শ্রমিকের জন্য ৬০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।

এদিকে, লেবার সরকারের নতুন ‘বর্ডার সিকিউরিটি, অ্যাসাইলাম অ্যান্ড ইমিগ্রেশন বিল’ সংসদে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এই বিলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে তারা অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি এই বিলকে ‘দুর্বল’ বলে আখ্যায়িত করে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top