গাজাবাসীকে উৎখাতে ট্রাম্পের প্রস্তাব, তুরস্কের অবস্থান জানালেন এরদোয়ান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, কোনো শক্তিই ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমি থেকে জোর করে তাড়িয়ে দিতে পারবে না। মার্কিন স্থানান্তর প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা করে তিনি এসব কথা বলেন।

এরদোয়ান বলেন ‘হাজার হাজার বছর ধরে বিদ্যমান গাজাবাসীদের তাদের চিরন্তন মাতৃভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। গাজা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদেরই থাকবে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন এরদোগান। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের প্রস্তাবের প্রসঙ্গ টেনে এরদোগান বলেন, ইহুদিবাদী সরকারের চাপে গাজা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের প্রস্তাবগুলো আলোচনার যোগ্য নয়।

এ সময় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতিশ্রুতি পূরণ করায় হামাসের প্রশংসা করেন এরদোয়ান। ইসরায়েলিরা যুদ্ধবিরতি বাতিলের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য সব চেষ্টা করছে বলেও দাবি তার।

সিরিয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে এরদোয়ান বলেন, সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে গণকবর উন্মোচিত হচ্ছে। সে সঙ্গে দিন দিন আসাদ সরকারের রক্তাক্ত মুখ উন্মোচিত হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা উপত্যকা দখল করার এবং সেখানে বসবাসকারী সব মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার বিতর্কিত প্রস্তাব দেন। তার পরিকল্পনার ঘোষণায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ শেষে ইসরায়েল গাজা উপত্যকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করবে। ফিলিস্তিনিরা ইতিমধ্যেই অনেক নিরাপদ এবং সুন্দর সম্প্রদায়ে পুনর্বাসিত হয়ে যেতে পারত। যেখানে নতুন এবং আধুনিক বাড়িঘর থাকবে। এটি হলে সেখানে মার্কিন সৈন্যদের কোনো প্রয়োজন হবে না।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব ‘সতর্কতা’ সহকারে শোনার যোগ্য। অপরদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, তিনি গাজার বাসিন্দাদের উপত্যকা থেকে স্বেচ্ছায় প্রস্থানের অনুমতি দেওয়ার একটি পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।

কাটজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাহসী পরিকল্পনাকে স্বাগত জানাই, যা গাজার জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তরিত করার পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, ইসরায়েলি পরিকল্পনা অনুসারে গাজার বাসিন্দারা যে কোনো দেশে যেতে পারে। যে দেশ তাদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুক সেখানে স্থলপথে অথবা সমুদ্র ও আকাশপথে প্রস্থানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে যেতে পারবেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার ফিলিস্তিনিরা বেশিরভাগই উপত্যকা ছেড়ে যেতে পারেনি; সীমিত পর্যায়ে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরের কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া।

স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ের কথা উল্লেখ করে কাটজ বলেন, যারা গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনার সমালোচনা করেছে এবং ট্রাম্পের প্রস্তাবের সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি হওয়ার সম্ভাবনা কম, ফিলিস্তিনিরা সেসব জায়গায় যেতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top