‘ভাঙার পরে গড়া’ বিষয়ে যে বার্তা উপদেষ্টা মাহফুজের

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ভাঙার পরে গড়ার সুযোগ এসেছে, কিন্তু অনন্ত ভাঙা প্রকল্প আমাদের জন্য ভালো ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবহ না। গড়ার প্রকল্পগুলো খুব দ্রুতই শুরু ও বাস্তবায়ন হবে। আপনারা গড়ার কাজে সক্রিয় হোন। 

আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে ‘গড়ার তাকত আছে আমাদের?’ এমন শিরোনাম দিয়ে একটি পোস্টে এই মন্তব্য করেন তিনি।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম লিখেছেন, আমরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আধিপত্যবাদ মোকাবিলা করছি। নিছক কিছু মূর্তি বা দালান নয়। মূর্তি (idols) না ভেঙে আমাদের উচিত আমাদের শত্রুদের শক্তির বিপরীতে পাল্টা চিন্তা (Ideals), শক্তি ও হেজেমনি গড়ে তোলা। ভাঙার প্রকল্প থেকে সরে এসে দিনকে দিন আমাদের গড়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত।

তিনি লেখেন, লীগ বা হাসিনা সে অর্থে কিছুই না, বরং আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের এক্সটেনশন। আর, আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ তার হেজেমনি তৈরি করছে বাস্তবধর্মী রাষ্ট্রকল্পনা, দেশে এবং ডায়াসপোরায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করে। আমাদের পাল্টা হেজেমনিও এ তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল।

তিনি আরও লেখেন, ভাঙার পরে গড়ার সুযোগ এসেছে, কিন্তু অনন্ত ভাঙা প্রকল্প আমাদের জন্য ভালো ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবহ না। গড়ার প্রকল্পগুলো খুব দ্রুতই শুরু ও বাস্তবায়ন হবে। আপনারা গড়ার কাজে সক্রিয় হোন। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন শিগগির শুরু হবে। আহত ও নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন ও জুলাই গণহত্যার বিচারের কাজও চলমান। এ মাসেই এ কাজগুলো আরও গতি পাবে।

এই উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ নিছক ভাঙা নয়, বরং বিকল্প গড়ারও লড়াই। নতুন বন্দোবস্তে আমরা ভাঙার চেয়ে গড়ার দিকে গুরুত্ব দিতে চাই। পুনশ্চ: খুনি হাসিনার বক্তব্য প্রচার এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দায়ী থাকবে আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ। এজন্যই আমাদের উচিত, সৃজনশীল শক্তির বিকাশ ঘটানো এবং সার্বিকভাবে এ আধিপত্যবাদ মোকাবিলায় প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে দূরদর্শী পদ্ধতি নেওয়া।

তিনি লিখেছেন, এ লড়াই মাত্র শুরু হলো। অন্তত, এক দশক পরে এ লড়াইয়ের একটা মীমাংসা হয়তো হবে। অথচ, সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি সামান্যই। রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা নেতিবাচক এনার্জি, কিন্তু অভ্যুত্থানের পর আমাদের এসব এনার্জিকে ইতিবাচক রূপান্তরের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। এখনো সে সুযোগ হারিয়ে যায়নি। আগামী অন্তত এক দশকব্যাপী দীর্ঘ গণতান্ত্রিক ও আধিপত্যবাদ-বিরোধী লড়াইয়ের জন্য আমাদের সৃজনশীল শক্তিকে কাজে লাগানো দরকার।

মাহফুজ আলম রেখেন, ভবিষ্যৎপানে তাকান, ইতিহাস আমাদের সুযোগ দিয়েছে। আমাদের এবার জিততেই হবে, আর জেতার উপায় একটাই- রাষ্ট্রকল্প, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও দক্ষ ও মর্যাদাবান মানবসম্পদ গড়ে তোলা। আল্লাহ আমাদের ফেরাসত তথা দূরদৃষ্টি দিক।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top