ভারতের ‘বিতর্কিত’ একাদশ নিয়ে ইংল্যান্ডে তোলপাড়

ভারত-ইংল্যান্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজের একটি ঘটনা ক্রিকেট দুনিয়ায় রীতিমতো ঝড় তুলেছে। কনকাশন বদলির নিয়ম থাকলেও, ভারতের করা পরিবর্তন নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করা অলরাউন্ডার শিভাম দুবের পরিবর্তে ভারত দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে পেসার হার্ষিত রানাকে, যা মেনে নিতে পারছে না ইংল্যান্ড শিবির। এ নিয়ে বিতর্কে উত্তাল ইংলিশ ক্রিকেট মহল।

শিভাম দুবে মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার, যিনি মাঝে মাঝে মিডিয়াম পেস বলও করেন। কিন্তু তার জায়গায় ভারতীয় দলে নেওয়া হলো হার্ষিত রানাকে, যিনি মূলত একজন ফাস্ট বোলার। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে মাঠে দেখে বিস্মিত হয়ে যায় ইংলিশ দল। অধিনায়ক জস বাটলার সরাসরি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন এবং কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘পরবর্তী ম্যাচে আমরা ১২ জন খেলোয়াড় নিয়ে নামবো!’

সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক এই সিদ্ধান্তকে ‘বুদ্ধিহীন’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, ‘একজন ব্যাটিং অলরাউন্ডার, যিনি ২০২৪ আইপিএলে মাত্র এক ওভার বল করেছিলেন, তার বদলে নেওয়া হলো একজন পূর্ণাঙ্গ পেসারকে! এটি কিভাবে ন্যায়সঙ্গত হয়?’

প্রখ্যাত ধারাভাষ্যকার ও সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভনও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘কীভাবে একজন পার্ট-টাইম বোলারের পরিবর্তে একজন ফুলটাইম পেসার নেওয়া হয়?’ ভারতীয় বিশ্লেষক হার্শা ভোগলের এক পোস্টকে ব্যঙ্গ করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘বিশেষ করে যখন আপনি একজন ব্যাটারের বদলে বোলারকে খেলান!’

শুধু ইংল্যান্ডেই নয়, ভারতের ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রাক্তন ক্রিকেটার আকাশ চোপড়া লিখেছেন, ‘দুবের পরিবর্তে হার্ষিত কোনোভাবেই লাইক-ফর-লাইক রিপ্লেসমেন্ট নয়। এর বদলে রামানদীপ সিং অনেক বেশি মানানসই হতেন।’

পরাজয়ের পর ইংলিশ অধিনায়ক বাটলার স্পষ্টভাবে বলেন, ‘এটি ন্যায্য বদলি নয়। যদি এটি সত্যিই লাইক-ফর-লাইক পরিবর্তন হয়, তাহলে হয়তো দুবেকে ২৫ মাইল গতিতে বল করতে হবে কিংবা রানাকে ব্যাটিং করতে হবে! আমি যখন ব্যাট করতে নামি, তখনই মনে প্রশ্ন জাগে—হার্ষিত আসলে কার বদলে খেলছে?’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘যদি এমন পরিবর্তন বৈধ হয়, তাহলে পরের ম্যাচে আমরাও ১২ জন খেলানোর কথা ভাবতে পারি!’

এ নিয়ে ভারতীয় শিবির থেকে প্রতিক্রিয়া এসেছে বোলিং কোচ মরনে মরকেলের পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, ‘শিভাম ইনিংস বিরতির পর মাঠে নামে, কিন্তু মাথা ঘোরার সমস্যা অনুভব করে। আমরা নিয়ম মেনেই ম্যাচ রেফারির কাছে রিপ্লেসমেন্টের প্রস্তাব পাঠাই। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ম্যাচ রেফারিরই ছিল।’

ভারতের দেওয়া এই ব্যাখ্যা বিতর্ক কমানোর বদলে আরও জোরদার করেছে। ক্রিকেটবিশ্বে কনকাশন বদলির নিয়ম নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এখন দেখার বিষয়, ইংল্যান্ড কি সত্যিই পরবর্তী ম্যাচে পাল্টা চমক দেখায়!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top