ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বন্ধু না শত্রু, জবাব দিলেন জয়শঙ্কর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বন্ধু না শত্রু, এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি এর কৌশলি জবাবও দেন। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের হংসরাজ কলেজে একটি ইন্টারেক্টিভ সেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ওই প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, আমি সম্প্রতি তার (ট্রাম্পের) শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি। আমরা ভালো আচরণ পেয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, তিনি একজন আমেরিকান জাতীয়তাবাদী।

এ সময় জয়শঙ্কর ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর জোর দেন এবং বিশ্বব্যাপী কূটনীতির ক্রমবর্ধমান প্রকৃতি এবং এর প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তিনি স্বীকার করেন, ট্রাম্পের নীতিগুলো বৈশ্বিক বিষয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ভারতের বিদেশ নীতি জাতীয় স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হবে।

জয়শঙ্কর বলেন, তিনি অনেক কিছু পরিবর্তন করবেন। হয়তো কিছু বিষয় সিলেবাসের বাইরে থাকবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে আমাদের সিলেবাসের বাইরে বিদেশনীতি পরিচালনা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কিছু বিষয় থাকতে পারে যেখানে আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। কিন্তু এমন অনেক বিষয় থাকবে যেখানে আমাদের মধ্যে মিল থাকবে।

এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ট্রাম্পের মধ্যে দৃঢ় ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপরও জোর দেন। তিনি বলেন, আমেরিকার সাথে আমাদের সম্পর্ক দৃঢ় এবং ট্রাম্পের সাথে মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্কও ভালো।


ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর অতি সহজভাবে জবাব দিলেও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভারতীয়রা আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ, দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসী বিতাড়ন করতে ধারাবাহিক কিছু সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন তিনি। ট্রাম্পের ওই কঠোর পদক্ষেপে মার্কিন নাগরিকত্ব হারাতে যাচ্ছেন লাখ লাখ ভারতীয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব নীতি বাতিলের কার্যক্রম শুরু সংক্রান্ত আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার পরে এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেন তিনি। আদেশটি বাস্তবায়ন হলে আর কেউ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলে জন্মসূত্রে দেশটির নাগরিকত্ব পাবেন না।

পরিস্থিতি বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প একগুঁয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন থেকে ফিরে আসবেন না। অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে তিনি জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব নীতি বাতিল করবেন। এতে ১৬ লাখ ভারতীয় মার্কিন নাগরিকত্ব হারাতে যাচ্ছেন। ফলে অনেক ভারতীয় ট্রাম্পকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করছেন। তারা মনে করছেন, ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় তাদের দুর্দশা বাড়তে চলেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top