সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা সরানোর ঘোষণায় কেন দুশ্চিন্তায় তুরস্ক-ইসরায়েল?

বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় বিশৃঙ্খলার সুযোগে ভয়ংকর হামলা করে ইসরায়েল। টানা কয়েক দিনের হামলায় ধ্বংস করে ফেলা হয় সিরিয়ার সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রভান্ডার। সে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সমর্থনে ইসরায়েল কৌশলগত গোলান মালভূমির বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে তারা। মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতিই ইসরায়েলকে এমন সাহস জুগিয়েছে। কিন্তু এবার ইসরায়েলকে দুশ্চিন্তায় ফেলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আনাদোলু এজেন্সি, টিআরটি ওয়ার্ল্ডসহ ইসরায়েলের গণমাধ্যম বলছে, সিরিয়ায় থাকা কয়েক হাজার মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেওয়া হবে। আর এতেই চিন্তিত ইসরায়েল। ভয়ও ঢুকে গেছে তেল আবিবের কর্মকর্তাদের মনে। সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর দেশটির কিছু অঞ্চল নিজেদের দখলে নেয় ইসরায়েল। দেশটির পরিকল্পনা ছিল দক্ষিণে সীমানা আরও বাড়াবে। কিন্তু ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্তে বড় বিপদে পড়বে ইসরায়েল।

এরই মধ্যে ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার অধিকৃত মাউন্ট হারমন পরিদর্শন করেন। গেল মাসে দখল করে নেওয়া এই অঞ্চলে ইসরায়েল তাদের সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে বলেও জোরারোপ করেন কাটজ।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন বলছে, সিরিয়ায় দেশটির প্রায় ২ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তাহলে বিপদে পড়বে তুরস্কও। কারণ, ওয়াশিংটনের মদদেই সিরিয়ায় শক্তিশালী হয়ে উঠেছে ওয়াইপিজে। এই গ্রুপটি সিরিয়া ও ইরাকে স্বঘোষিত কুর্দি রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। ওয়াইপিজের সঙ্গে বছরের পর বছর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। কিন্তু তাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না এরদোয়ানের বাহিনী।

তবে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে এই অঞ্চলে নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়বে। তুরস্ক বলছে, উত্তরাঞ্চলীয় সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করা হলে ওয়াশিংটনের ন্যাটোর মিত্রর নিরাপত্তা উদ্বেগ নিয়ে ট্রাম্পের ভাবা উচিত। যদিও তুরস্ক বারবার বলে আসছে, সশস্ত্র গ্রুপটিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া না হলে তারা সামরিক অভিযান শুরু করবে।

নিজের শেষ অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন তুরস্ককে আপাত সামরিক অভিযান স্থগিত করাতে সক্ষম হন। তবে তুরস্কের আর তর সইছে না। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া ছাড়লে নতুন বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে আঙ্কারা। ওয়াইপিজে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ পাক তুরস্ক সেটাও চাইছে না। ব্লিনকেনের উত্তরসূরি মার্কো রুবিওকে এক ফোনকলে সে কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top